মৌলিক ও সাধিত ধাতু

অষ্টম শ্রেণি (দাখিল) - বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি - শব্দ ও পদ | NCTB BOOK

মৌলিক ধাতু : মৌলিক ধাতুকে ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা যায় না। এগুলোকে সিদ্ধ বা স্বয়ংসিদ্ধ ধাতুও বলা হয়ে থাকে।

বাংলা ভাষায় মৌলিক ধাতু তিন প্রকার। যথা :

     ১. সংস্কৃত ধাতু

     ২. বাংলা ধাতু

     ৩. বিদেশাগত ধাতু

 

১. সংস্কৃত ধাতু : তৎসম ক্রিয়াপদের ধাতুকে সংস্কৃত ধাতু বলে। যেমন :

     অক্ + অন = অঙ্কন : ছোটদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিথু প্রথম হয়েছে।

     দৃশ্ + য = দৃশ্য : দুর্ঘটনার মর্মান্তিক দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না।

     কৃ + তব্য = কর্তব্য : ছাত্রদের কর্তব্য লেখাপড়া করা।

     হস্ + য = হাস্য : অকারণ হাস্য-পরিহাস ত্যাগ কর।

 

২. বাংলা ধাতু : যেসব ধাতু সংস্কৃত থেকে প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় ব্যবহৃত হয়, তাকে বাংলা ধাতু বা খাঁটি বাংলা ধাতু বলে। যেমন :

     আঁক্ + আ = আঁকা : কী সব আঁকাআঁকি করছ ?

     দেখ্‌ + আ দেখা : জাদুঘর আমার কয়েকবার দেখা।

     কর্ + অ = কর : তুমি কী কর?

     হাস্ + ই = হাসি : তোমার হাসিটি খুব সুন্দর।

 

৩. বিদেশাগত ধাতু : বিদেশি ভাষা থেকে আগত যেসব ধাতু বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়, তাকে বিদেশাগত ধাতু বা বিদেশি ধাতু বলে। যেমন :

     খাট্ + বে = খাটবে : যত বেশি খাটবে ততই সুফল পাবে।

     বিগড়ু + আনো : তোমার বিগড়ানো ছেলেকে ভালো করার সাধ্য আমার নেই ৷

     টান্ + আ : আমাকে নিয়ে টানাটানি করো না, আমি যাব না।

     জম্ + আট = জমাট : অন্ধকার বেশ জমাট বেঁধেছে।

সাধিত ধাতু : মৌলিক ধাতু বা নাম শব্দের পরে আ-প্রত্যয়যোগে সাধিত ধাতু গঠিত হয়ে থাকে।

সাধিত ধাতু তিন প্রকার। যথা :

     ১. প্রযোজক ধাতু

     ১. প্রযোজক ধাতু

     ৩. কর্মবাচ্যের ধাতু

১. প্রযোজক ধাতু : মৌলিক ধাতুর পরে (অপরকে নিয়োজিত করা অর্থে) আ-প্রত্যয়যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে প্রযোজক ধাতু বা ণিজন্ত ধাতু বলে। যেমন :

     পড়ু + আ = পড়া : শিক্ষক ছাত্রদের পড়াচ্ছেন।

     কর্ + আ = করা : সে নিজে করে না, অন্যকে দিয়ে করায়

     খেল্ + আ = খেলা : ‘হা - ডু - ডু' আমাদের জাতীয় খেলা৷

২. নাম ধাতু : বিশেষ্য, বিশেষণ ও অনুকার অব্যয়ের পরে আ-প্রত্যয়যোগে গঠিত ধাতুকে নাম ধাতু বলে। যেমন :

     ঘুম্ + আ = ঘুমা : বাবা ঘুমাচ্ছেন।

     ধমক্‌ + আ = ধমকা : আমাকে যতই ধমকাও, আমি এ কাজ করব না।

     হাত্ + আ = হাতা : অন্যের পকেট হাতানো আমার স্বভাব নয়৷

৩. কর্মবাচ্যের ধাতু : বাক্যে কর্তার চেয়ে কর্মের সাথে যখন ক্রিয়ার সম্পর্ক প্রধান হয়ে ওঠে, তখন সে ক্রিয়াকে কর্মবাচ্যের ক্রিয়া বলে। কর্মবাচ্যের ক্রিয়ার মূলকে কর্মবাচ্যের ধাতু বলে৷

মৌলিক ধাতুর সাথে আ-প্রত্যয়যোগে কর্মবাচ্যের ধাতু গঠিত হয়। যেমন :

     কর্ + আ = করা : আমি তোমাকে অঙ্কটি করতে বলেছি।

     হার্ + আ = হারা : বইটি হারিয়ে ফেলেছি।

     খা + ওয়া = খাওয়া : তোমার খাওয়া হলে আমাকে বলো৷

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion